আজ মঙ্গলবার, ২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

স্থানীয় গণতন্ত্রে ওসমানদের থাবা !

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নিজের বিতর্কিত কর্মকা-ের কারণে কেন্দ্রে ও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের আগের অবস্থান হারিয়েছেন শামীম ওসমান। এর ফলে শহরে তাঁর আধিপত্যের জায়গাগুলো দুর্বল হচ্ছিল। কিছু ঘনিষ্ঠজন সরেও যাচ্ছে তাঁর কাছ থেকে। ধীরে ধীরে শামীম ওসমানের পরিধি এখন ছোট থেকে ছোট আঁকার ধারণ করছে। তবে এর আগে শামীম ওসমান বেকফুট থেকে ফ্রন্টফুটে আসতে চেষ্টা করছিলেন। তার সকল চেষ্টার মধ্যে পানি ঢেলে দেন পুলিশ সুপার হারুন অরশীদ। তার যোগদানের পর থেকেই নগরির যে সকল স্থানে শামীম ওসমান ও তার বলয়ের নেতৃবৃন্দদের আধিপত্ব রয়েছে সেখানেই হানা দিয়েছে পুলিশ। এতে কণঠাসা হয়ে পরে প্রভাবশালী এই সংসদ সদস্য সেই সাথে তার ভাই জাতীয় পার্টির সাংসদ সেলিম ওসমান। তবে তাদের অনুসারীরা বলছে, স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে এখনো ওসমান পরিবারের কোন বিকল্প নেই। অপরদিকে দলের অন্য একটি পক্ষ ও ভিন্ন দলের রাজনীতিকরা বলছে, নারায়ণগঞ্জে গণতন্ত্রের জন্য তারা ক্ষতিকর। তাদের থাবায় থেমে যায় স্থানীয় গণতন্ত্র।

আওয়ামীলীগের একটি অংশ ও বিএনপির অনেকের মতে, এখানকার ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে সব সময়ে হাতের মুঠোয় রাখতে চান ওসমান পরিবার। এ ক্ষেত্রে শামীম ওসমান যেমন সেলিম ওসমানও তেমনই। সর্বশেষ বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে উদাহরণ হিসেবে টেনে তারা বলেন, এক ভাই চেয়ারম্যান ঠিক করে দিলেন আরেক ভাই ভাইস চেয়ারম্যান। যার কারনে বন্দরে কোন ভোট উৎসব হয়নি। এমনকি মাইকে ডেকেও ভোটারদের কেন্দ্রমূখী করা যায়নি। যদিও নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সব চেষ্টাই করেছেন। এরপর বাংলাদেশ ইয়ার্ণ মার্চেন্ট এসোসিয়েশন নির্বাচনকে ঘিরে একই রকম ভূমিকায় দেখা যায় এই দুই ভাইকে। সেলিম ওসমান প্রকাশ্যে একজন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। নির্বাচনের দিন দুই ভাইকেই দেখা গেছে। সেলিম ওসমান মাইক হাতে তদারকিও করেছে। তবে শেষপর্যন্ত ব্যবসায়ীরা তাদের প্রার্থীকে বেছে নেয়নি।
নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নির্বাচনেও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আছে সেলিম ওসমানের। তিনি নিজেও প্রায় এক দশক ধরে বিকেএমইএ’র প্রেসিডেন্ট পদে আঁকড়ে আছেন। অভিযোগ আছে, তার কারনে অনেকে বিজেএমইএ’র দিকে ঝুঁকছে।

সূত্র মতে, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বন্ধ প্রায় দুই যুগ ধরে। এ নিয়ে তেমন কোন মাথা ব্যথা নেই শামীম ওসমানের। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন বন্ধ রয়েছে তার ইঙ্গিতেই। বর্তমান চেয়ারম্যন ও বিএনপি নেতা আজাদ বিশ্বাস তার নিকটজন হওয়ায় তিনি এ নির্বাচন নিয়ে কোন রা’ করে না। একইভাবে বাংলাদেশ হোসিয়ারি এসোসিয়েশনের নির্বাচনেও প্রভাব থাকে এ দুই ভাইয়ের। তাদের কারনে কোন ভোটাভুটি হয়না বলে অভিযোগ সাধারণ সদস্যদের।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে অনেকই বলেন, নিজেদের সিলেক্ট করা প্রার্থীকে জয়যুক্ত করতে অন্য প্রার্থীদের সরিয়ে দেয় ওসমান পরিবারের দুই সংসদ সদস্য। যেমনটা দেখা গেছে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। সেই নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দি¦ প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে যাওয়ার জন্য বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামীলীগের একটি অংশ, বিএনপির অনেক রাজনীতিক ও সুশীল সমাজ মনে করেন, নারায়ণগঞ্জের গণতন্ত্রের জন্য ওসমানরা ক্ষতিকর। তারা থাবা মারে বলেই এষানকার সব প্রতিষ্ঠানে নিয়ম মতো নির্বাচন হয়না। বিভিন্ন সংগঠনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেতা হয়।